ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ৯:২১
বাংলা বাংলা English English

আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ


সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে সম্পাদক পদে ভোট পুনর্গণনা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের সমাধান হয়নি। রোববার এদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত বুধবার আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপিপন্থী দুই আইনজীবী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন।

রোববার দুপুরে কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে সম্পাদক পদে ভোট পুনর্গণনা ও অপপ্রচার বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। একই সময়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল করে। এ সময় দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বার ভবনের সামনে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল, বারের সাবেক সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহদী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান সিদ্দিকী, সাবিনা ইয়াসমিন মলি প্রমুখ।

অপরদিকে বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, মির্জা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৫ হাজার ৯৮২ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ১৭ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত চলে ভোট গণনা। গণনা শেষে দেখা যায়, সভাপতিসহ ৬টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ও সম্পাদকসহ ৮টি পদে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল বিজয়ের পথে। সম্পাদক পদে নীল প্যানেলের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আওয়ামী লীগের প্রার্থী থেকে অল্প ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার প্রস্তুতি নিলে সম্পাদক পদে ভোট পুনরায় গণনার দাবি তোলেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা।

নির্বাচন কমিশনের প্রধান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এওয়াই মশিউজ্জামান অভিযোগ নাকচ করে ফলাফল ঘোষণা করতে অনড় থাকলে মিছিল, স্লোগান, হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল লিখিতভাবে ভোট পুনরায় গণনার আবেদন করেন। আবেদন গ্রহণ না করলে নির্বাচন কমিশনের প্রধান এওয়াই মশিউজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বলেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে তিনটার দিকে নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কমিটির প্রধান এওয়াই মশিউজ্জামান সম্পাদক পদে ভোট পুনরায় গণনার আবেদন নেন ও ভোটের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেন। ওই সময় তিনি জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় দুই সম্পাদক প্রার্থীর উপস্থিতিতে ভোট পুনরায় গণনার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু শুক্রবার এওয়াই মশিউজ্জামান সুপ্রিম কোর্ট বারে আসেননি। এ কারণে ভোট পুনর্গণনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কমিটির প্রধানের পদ থেকে মশিউজ্জামানকে পদত্যাগ করেন।

জানা গেছে, গত ৬ এপ্রিল বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা ফলাফল নিয়ে জটিলতা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে বৈঠক করেন। সেখানে নির্বাচনের ভোট গণনার সময় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে পদত্যাগ করা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ফলাফল ঘোষণার অনুরোধ করা হয়। এতে জেষ্ঠ্য আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

এ অবস্থায় বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত ১২ এপ্রিল। এর আগেই সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত নেতাদের কক্ষে নেম প্লেট লাগানো হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

সব খবর