জমিদার বাড়ির দুই ছেলে। বড় ছেলে অমিত হাসান থাকেন শহরে, আর ছোট ছেলে বাপ্পারাজ গ্রামে। বাপ্পারাজের কাজই সারাদিন গ্রামে ঘুরে ঘুরে খেলাধুলা ও বাড়তি কাজ করে বেড়ান। এদিকে তাদের মামা খলিলের মেয়ে শিল্পী এসে থাকতে শুরু করে জমিদার বাড়িতে, যে কিনা বাপ্পারাজকে ভালোবাসে, আবার অন্যদিকে সারাদিন এই গাছ থেকে ওই গাছে ঘুরে বেড়ান পূর্ণিমাকে ভালোবাসে বাপ্পারাজ, যা পূর্ণিমা জানেই না।
শহর থেকে অমিত হাসান গ্রামে ফিরলে পূর্ণিমা ও অমিতের বিয়ে হয়ে যায়। ঠিক এভাবেই এগিয়ে চলে বাংলা সিনেমার ভিন্ন এক প্রেমের সিনেমা ‘প্রেমের নাম বেদনা’।
২০০০ সালে নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত এই সিনেমাটি দর্শক হৃদয়ে তখন বেশ নাড়া দিয়েছিল। সিনেমাটি ত্রিমুখী প্রেমের, তবে এর আগেও হয়তো এই ঘরানার অনেক সিনেমাই দেখেছেন, কিন্তু এই সিনেমা দর্শককে কাঁদিয়েছিল। তবে শুরুটা যতটা সুন্দর হয়েছিল, শেষটা ততটাই কাঁদিয়েছিল সবাইকে। সবার জন্য ত্যাগ করা ছেলেটাই শেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আর তার মৃত্যুটাই মানিতে কষ্ট হয়েছিল অনুরাগীদের।
সিনেমাটিতে সে সময়ের নামকরা তারকারাই অভিনয় করেছেন। তবে সিনেমাটিতে সবার অভিনয়কে ছাপিয়ে বাপ্পারাজ ছিলেন সবার ঊর্ধ্বে। ভাইয়ের জন্য আত্মত্যাগ, নিজের ভালোবাসার মানুষকে তুলে দেওয়া আবার শিল্পীর জন্য নিজেকে বিপদে ফেলা সবই একাই করেছেন। এ ছাড়া বাপ্পার পাশাপাশি অমিত হাসান, পূর্ণিমা, খলিল, শিল্পী ও পর্দায় ভালোই দেখা গিয়েছিল। বড় ভাইয়ের চরিত্রে অমিত হাসান যতটুকু দেওয়ার দিয়েছেন, পূর্ণিমাও চঞ্চল ও চপলা একটি মেয়ে হিসেবে নিজের সবকুটুই ঢেলে দিয়েছেন। অন্যদিকে, শিল্পী প্রথমে পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে থাকলেও শেষ পর্যন্ত পর্দায় যেন তিনিই ছিলেন একচ্ছত্রভাবে। শিল্পীর বিষ খেয়ে মৃত্যুটাও কাঁদিয়েছে সবাইকে।
এই সিনেমায় শুধু অভিনয়ই নয় সংলাপগুলো ছিল একটার থেকে একটা ভিন্ন। এমন সংলাপ সঙ্গে মিলিয়ে অভিনয়ের মিশেল যেন অনুরাগীদের আরও বেশিক্ষণ টেনে রাখতে পেরেছিল। রাজ্জাক নিজের অভিনীত ছবিও নিজে রিমেক করেছেন। ‘প্রেমের নাম বেদনা’ ছিল তারই অভিনীত ‘বদনাম’ ছবির রিমেক। ব্যর্থ প্রেমিকের আত্মত্যাগকে বাপ্পারাজ খুল ভালো ফুটিয়ে তুলেছিলেন। আবেগতাড়িত করেছে এমন সিনেমার মধ্যে প্রেমের নাম বেদনা অন্যতম।