ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, সকাল ৬:৫৬
বাংলা বাংলা English English

ঢাকায় ফিরছে মানুষ, সবার যাত্রা নিরাপদ হোক


প্রতি বছরই ঈদের ছুটিতে রাজধানীর বাসিন্দাদের মধ্যে বড় একটি অংশ গ্রামের বাড়ি যান। এ ছাড়া ছুটি কাটাতে যান অনেকে বিদেশে। অনেকেই আবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়িসহ পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করেন। গত দু’বছর করোনার প্রভাব থাকায় সাধারণ মানুষের ঈদযাত্রা ছিল না। তবে এবার করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় গ্রামে গেছে বিপুল মানুষ। এবারের ঈদের ছুটি আগে ভাগে শুরু হওয়ায় ২৮ এপ্রিল থেকেই রাজধানীর ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা। রোজার শেষ দিনেও ঢাকা ছাড়েন অনেকেই। যাত্রী পরিবহন নিয়ে তথ্য সংগ্রকারীরা অনুমান করছেন, এবারের ঈদে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ লোক ঢাকা ছেড়ে গেছেন। সে হিসেবে চার দিনে এক কোটির বেশি মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। ৩০ লাখ যাত্রীর মধ্যে প্রতিদিন বাসে ৮ লাখ, ট্রেনে ১ লাখ, লঞ্চে দেড় লাখ, ব্যক্তিগত গাড়িতে চার লাখ ও বাইক রাইড করে চার লাখ লোক ঢাকা ছেড়েছেন। বাকি ১৫ লাখ লোক ঝুঁকি নিয়ে কভার্ড ভ্যান, ট্রাক, পিকআপ, ট্রেনের ছাদেসহ বিভিন্ন উপায়ে গ্রামের বাড়ি যান। এদিকে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিজের ভেরিফাইয়েড ফেসবুক আইডিতে এক তথ্যে জানান, ঈদের ছুটির ২৯ ও ৩০ এপ্রিল দুদিনে ৪৩ লাখ ৯ হাজার মোবাইল সিম ঢাকা থেকে বাইরে গেছে। আর গত ২৭, ২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল চার দিনে ঢাকা থেকে বাইরে গেছে ৩০ লাখ মোবাইল সিম। অর্থাৎ চারদিনে ঢাকার বাইরে গেছে ৭৩ লাখের বেশি সিম। এদিকে ঈদে ঘরমুখো মানুষ প্রতিবছরই দুর্ভোগের শিকার হয়। এবারও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ ছিল। প্রচ- গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছিল। এ অবস্থায় মহাসড়কে যানজট মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।
ঈদের ছুটি শেষ হয় গত বুধবার, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে অফিস চালু হয়েছে। অনেকেই ঢাকা ফিরে এসেছেন। তবে একদিন ছুটি নিয়ে কর্মজীবীদের বৃহৎ একটি অংশ গ্রামে থেকে গেছেন। শুক্র ও শনিবার দুদিনের বাড়তি ছুটি নিয়ে তারা আগামী রোববার থেকে অফিস করবেন। এজন্য শনিবার থেকে ঢাকায় ফিরতি মানুষের চাপ বাড়বে। কাজেই মহাসড়কে যাতে যানজটের কারণে মানুষের দুর্ভোগ না বাড়ে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। লক্ষ করা যায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কোনো গাড়ি বিকল হয়ে গেলে অথবা মহাসড়কের পাশে হাটবাজার বসার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়ে থাকে। কাজেই এগুলো বন্ধ করতে হবে। ফিটনেসবিহীন বা ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি যাতে মহাসড়কে নামতে না পারে, সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে। যাত্রী, পরিবহণ কর্মী, গাড়ির মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক না থাকলে এ দুদিন মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হতে পারে। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ চালকের বেপরোয়া মনোভাব। অনেক সময় যাত্রীরাও চালককে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করলে তাকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাতে হবে। গাড়ির মালিকের চাপের কারণেও চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকেন। আবার কোনো কোনো চালক অভ্যাসবশত বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করেন। যে কারণেই হোক না কেন, মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের এ সময়ে চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা থেকে বিরত থাকতে হবে। ঢাকায় ফিরে আসা মাননুষদের যাত্রা নিরাপদ করতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

সব খবর