ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ৯:০২
বাংলা বাংলা English English

স্কুল-কলেজ বন্ধ, শ্রীলঙ্কায় সরকার উৎখাতে ধর্মঘটের ডাক


শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। চরম অর্থনৈতিক সংকট ও দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তার সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছে দেশটির জনগণ। এতে যোগ দিয়েছেন সরকারি-বেসরকারি কর্মীরা। শুক্রবার (০৬ মে) থেকে স্কুল-কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন শ্রীলঙ্কার প্রধান রফতানি প্রক্রিয়া অঞ্চল থেকে কমপক্ষে ৩ হাজার কারখানা শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেয়। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা রাভি কুমুদেশ বলেন, আমরা প্রেসিডেন্টের নীতিগত ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি। দেশের অর্থনীতিকে দুর্দশার দিকে নিয়ে গেছে। তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।

আমদানিকৃত খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির প্রতিবাদে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশটির বিভিন্ন শহরে থেমে থেমে বিক্ষোভ হচ্ছে। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বড় বড় শহরে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজধানী কলম্বোর প্রধান রেল স্টেশনে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিন অল্প কিছু সরকারি বাস রাস্তায় দেখা যায়। স্বাস্থ্যকর্মীরাও ধর্মঘটে যোগ দিলেও জরুরি পরিষেবা চালু রাখে।

 

সড়কের পাশাপাশি অনলাইনেও জোরদার হচ্ছে শ্রীলঙ্কার সরকারবিরোধী আন্দোলন। রাজাপক্ষে সরকারকে হটাতে আন্তর্জাতিক সংস্থার হস্তক্ষেপ চেয়েছে দেশটির নাগরিকরা। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে আবেদন। এদিকে চলমান অর্থনৈতিক সংকটে চা শ্রমিকদের জীবন হয়ে উঠেছে আরও মানবেতর।

সড়কের পাশাপাশি অনলাইনেও জোরদার হচ্ছে আন্দোলন। রাজাপক্ষে সরকারকে হটাতে বিভিন্ন প্লাটফর্মে সরব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চলমান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা চেয়ে অনলাইনে আবেদন করছেন তারা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ‘সেভ শ্রীলঙ্কা’ নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের অধীনে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে আবেদন। এতে লঙ্কান সরকারের ভুল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়।

 

এদিকে খবরে বলা হয়েছে, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান আরও কমেছে। রীতিমতো মানবেতর জীবনযাপন করছেন শ্রমিকেরা। গত বছর রাসায়নিক সার ব্যবহারে সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই শিল্প। চায়ের উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকরা।

যেমনটা বলছেন স্থানীয় এক নারী চা শ্রমিক। তার কথায়, ‘আমরা যা আয় করি তা দিয়ে চলা মুশকিল। কেবল একবেলা খেতে পারছি। প্রতিদিন কাজ করে মাত্র ৯০০ রুপি আয় করি। রুটি নয় কেবল এক কাপ চা খেয়ে কাজে যাই।’

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে শ্রীলঙ্কা। সংকট মোকাবিলায় লঙ্কান সরকার বৈদেশিক ঋণ পুনর্গঠন ও আইএমএফ-এর কাছে অতিরিক্ত ঋণ সহায়তা পেতে আলোচনা চালাচ্ছে।

 

সব খবর