অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তথ্য গোপনের অভিযোগে তিন বছরের সাজা থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, হাজী সেলিমকে তিন বছরের যে সাজা সেটা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে, সেটা সঠিক হয়নি বলেই এ আপিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আত্মসমর্পণ করতে বলার ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তা করেননি হাজী সেলিম। তার উচিৎ ছিল এটা দ্রুত করা।
এর আগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
এরপর গত বছর ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে একই মামলায় তথ্য গোপনের অভিযোগে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ওই রায় ঘোষণার পর দুদক আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানিয়েছিলেন, দুদক আইনে (২৬ এর ২ ধারা) করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় হাজী সেলিমকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
তবে দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগে তার সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশের রায় দেন আদালত।
চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। ১০ বছরের কারাদণ্ড বহালের রায় হাইকোর্ট থেকে বিচারিক আদালতে পাঠানো হয় গত ২৫ এপ্রিল। সেখানে তাকে এক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। তবে আত্মসমর্পণ না করেই বিদেশ ঘুরে এসেছেন হাজি সেলিম, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।