ঘরে স্ত্রী-সন্তান রেখে প্রেমের টানে নিজ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীকে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বাটিয়াখড়া গ্রামের ভারেঙ্গা একাডেমির সহকারী শিক্ষক হাসমত হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক হাসমত হোসেন উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বাটিয়াখড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
শুক্রবার (১৩ মে) ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বিষয়টি সময় নিউজকে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ভারেঙ্গা একাডেমির সহকারী শিক্ষক হাসমত হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়তো একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী কুশিয়ারা গ্রামের রফিকুল ইসলামের কন্যা মায়া খাতুন (১৫)। বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে ফুঁসলিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই শিক্ষক।
গত ৯ মে স্কুলে গেলে স্কুল ছুটির পর আর বাড়ি ফিরে আসেনি মায়া খাতুন। দুইদিন খোঁজাখুঁজির পরে মেয়েকে না পেয়ে মায়ার বাবা তাদের সহপাঠীদের কাছে খোঁজ নিলে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিক্ষক হাসমতকে ফোন করেন। হাসমত তখন মায়াকে নিয়ে পালিয়ে যাবার কথা স্বীকার করেন এবং তিনি মায়াকে বিয়ে করার কথা জানান।
এ কথা শোনার পরেই ১১ মে মায়ার বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বেড়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
ছাত্রীর বাবা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হাসমতকে আমি অনেক বিশ্বাস করতাম। তার কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তো। কিন্তু সে যে এতো বড় খারাপ, তা আমি জানতাম না। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী এবং আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
ভারেঙ্গা একাডেমির প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে হাসমত এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। আগে কখনও এমন আচরণ ওর মধ্যে লক্ষ্য করিনি। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে, হাসমত নিজ সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়েছেন। বিষয়টি জানার পরে আমি থানা পুলিশ ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তার বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, আমাদের কাছে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে মেয়ের বাবা। আমি তৎক্ষণাৎ এসআই শফিকুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করি এবং তদন্ত করে জানতে পারি শিক্ষক ওই ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে নিয়ে পালিয়েছে। উক্ত ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
৭ বছর আগে বাটিয়াখড়া গ্রামের মৃত হিরা মিয়ার কন্যা খাদিজাকে বিয়ে করেন শিক্ষক হাসমত। তার দুই ছেলে সন্তানও রয়েছে। স্ত্রী-সন্তান থাকার পরেও তিনি তার প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন।