ঢাকা, শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, দুপুর ১:১২
বাংলা বাংলা English English

বিহারে বজ্রপাতে ৩৪ জনের মৃত্যু


ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যা ও ভূমিধসে আসাম, অরুণাচল ও মেঘালয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে। শুধু আসামেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট লাখের বেশি মানুষ। এদিকে, বিহারে বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩৪ জন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ভারতের আসাম রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা। ২৯টি জেলা এখনো পানির নিচে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার। যার মধ্যে নগাঁও, হোজাই, কাছার ও দারাংয়ের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। নগাঁও জেলায় কমপক্ষে ৩ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ বানভাসি। কাছারে ১ লাখ ৬৬ হাজার, হোজাইয়ে ১ লাখ ১১ হাজার এবং দারাংয়ে অন্তত ৫২ হাজার ৭০৯ জন বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত।

রাজ্যের ২ হাজার ৫৮৫টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে বাস্তুহারা হয়েছে আট লাখের বেশি মানুষ। সবকিছু হারিয়ে অস্থায়ী ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। সরকারি কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার মানুষ। রেললাইনে রাত কাটাচ্ছে অন্তত ৫০০টি পরিবার। রাজ্যটিতে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছে বিমান ও সেনাবাহিনী। টানা বৃষ্টিতে আসামের গুয়াহাটির বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ধস নামছে।

এ ছাড়াও দেশটির মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ড্রোন ও উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করছে। ধারণা করা হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

বন্যা ও ভূমিধসে রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত অর্ধলক্ষ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তাঘাট ধসে পড়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনই মিলছে মৃতদেহের সন্ধান।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে অরুণাচল ও মেঘালয়েও। অরুণাচল প্রদেশের কর্মকর্তারা জানান, ১৫ মে রাত থেকে রাজ্যের রাজধানী ইটানগরের দুটি এলাকায় ভূমিধসের কারণে কমপক্ষে পাঁচজন মারা গেছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দফতর।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় আরেক রাজ্য বিহারে প্রবল ঝড় ও বজ্রপাতে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন। সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে ভাগলপুর জেলায় ৭ জন। মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে।

পাটনা আবহাওয়া দফতর জানায়, গুনাহাতে ১৫.২ মিমি ও আরারিয়ায় ৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সমস্তিপুরে ২২ মিমি, ভাগলপুরে ১৮.২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে।

 

শুক্রবার (২০ মে) দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘বিহারের বেশ কয়েকটি জেলায় বজ্রপাত ও প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে বহু লোক মারা গেছেন, যা দেখে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। ঈশ্বর শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দিন।’ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের অধীন স্থানীয় প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এবং ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে।

গত ১ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ভারতের উত্তর-পূর্বের চার রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সে কারণেই এ ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি।

সব খবর