করোনা মহামারিতে প্রায় পৌনে দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত ২ মার্চ শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস। কিন্তু বিদ্যালয় খোলার পর প্রথম মাসে বিদ্যালয়ে ফেরেনি প্রায় ৪৩ লাখ শিক্ষার্থী। এ সময়ের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী কমে গেছে বলে জানিয়েছে ব্র্যাক।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাজধানীর গুলশানের ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্র্যাক প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। গবেষণায় বলা হয়, বিদ্যালয়ে না ফেরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৩৩ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিশুদের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ার হার নির্ণয় করতে দুই ধরনের গবেষণা চালিয়েছে ব্র্যাক। গবেষণায় যুক্ত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. স্টিফেন হেইনম্যান, কানাডার সাইমন ফ্রেজার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসির অধ্যাপক জন রিচার্ডস এবং ইউএস এআইডির সাবেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা শহিদুল ইসলাম।
করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের গবেষক সামির রঞ্জন নাথ।
তিনি জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে স্কুল খোলার প্রথম মাসে প্রাথমিকের প্রায় ৪২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৯ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে ফেরেনি, যা প্রাথমিকের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৩ দশমিক ২ শতাংশ। শহর এলাকায় প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ প্রায় ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে প্রাথমিকে কমেছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। প্রাক-প্রাথমিকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কমেছে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। অপরদিকে প্রাথমিকে ছেলে শিক্ষার্থী কমার হার বেশি দেখা গেছে।
তবে করোনা পরবর্তীতে স্কুল খোলার পর শহর ও গ্রাম এলাকায় ছেলের চাইতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বেশি দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে না ফেরার কারণ হিসেবে বলা হয়, বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু না হওয়া, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি, শিক্ষায় অনাগ্রহ, শিক্ষা বিরতি কাটিয়ে ওঠার ভয়, মাদ্রাসা শিক্ষায় যুক্ত হওয়া, বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে পড়ার কারণে শিক্ষার্থীরা করোনা পরবর্তী সময়ে আর বিদ্যালয়ে যায়নি।