ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, বিকাল ৫:৫৩
বাংলা বাংলা English English

বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির জন্যই দেশব্যাপী লোডশেডিং: ফখরুল


বিদ্যুৎ প্রকল্পে সরকারের দুর্নীতির জন্যই দেশব্যাপী লোডশেডিংয়ের কারণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী লোডশেডিং নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মূল ক্ষতিটা হচ্ছে দেশের জনগণের। একটা হচ্ছে কুইক রেন্টালের টাকা, সে তো দিতে হচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও টাকা দিতে হচ্ছে, জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে দিতে হচ্ছে সেটা। প্রত্যেকবারই বাজেট থেকে বিরাট অংশ চলে যায়, প্রকাশ্যেই যায়, ওটা চুরি করে না, প্রকাশ্যেই যায়। এটা পুরোপুরিভাবে জনগণের ক্ষতি করা এবং অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে দেয়ার ঘটনা ছাড়া আর কিছুই না।

এদিকে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে লোডশেডিং চলছে।

বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৫২ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। আর জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট গ্যাসের ব্যবহারের ৭০ ভাগই বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে এলএনজির (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) দাম বাড়ায় সরকার সেখান থেকে আমদানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে কয়েকদিন ধরে জাতীয় গ্যাস-সাপ্লাই গ্রিডে এলএনজির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে, দিনে একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ২০১২ সালের আগে ‘লোডশেডিং’ শব্দটি খুব পরিচিত ছিল। এরপর তা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হয়।

২০১৮ সাল থেকে সরকার যেখানে লোডশেডিং শব্দের ব্যবহারই বন্ধ করে দেয়, সেখানে গতকাল ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্যাসের স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় চাহিদার তুলনায় ডিপিডিসিকে কম বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ফলে ডিপিডিসির কিছু কিছু এলাকায় ‘অনিচ্ছাকৃত’ লোডশেডিং হচ্ছে।

এমন লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বিশ্ববাজার থেকে এলএনজিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি সংগ্রহে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে, দৈনিক ৩৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে পেট্রোবাংলা সরবরাহ করতে পারছে ২৭৫-২৮০ কোটি ঘনফুট। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ২০-২৫ কোটি ঘনফুট কম। এরই প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে।

ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসি বলছে, পিকটাইম দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত তাদের চাহিদা যেখানে ১৬শ’ মেগাওয়াট, সেখানে তারা সরবরাহ পাচ্ছেন ১৪শ থেকে সাড়ে ১৪শ মেগাওয়াট। তবে সন্ধ্যার পর থেকে যেমন কমে চাহিদা তেমনি কমে লোডশেডিং।

কোন এলাকায় কখন বিদ্যুৎ থাকবে না তার একটি সম্ভাব্য সময় আগেই গ্রাহকদের জানিয়ে দিতে কাজ করছে বলেও জানিয়েছে ডিপিডিসি।

সব খবর