কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে চাঞ্চল্যকর আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু(৪২) হত্যা মামলার ২ আসামীকে গ্রেফতার করেছে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ।
হত্যা মামলায় জড়িত এজাহার নামীয় এক আসামি সহ তদন্তে পাওয়া অপর আসামিকে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদ্বয় নিহত বাচ্চুর গ্রামের হাশেম আলীর পুত্র আল আমিন ও তার ভগ্নিপতি মুছা মিয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাচ্চুর ভাই শাহজাহান, মুছা মিয়ার নিকট জমি বন্ধক দিয়ে ৭০ হাজার টাকা নেন। জমি বন্ধকের টাকা ফেরত না পাওয়াকে কেন্দ্র করে উক্ত হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বাচ্চু ঘটনার দিন বাড়িতে না ফেরায় নিখোঁজ বাচ্চু মিয়ার স্বজনরা নাগেশ্বরী থানায় একটি জিডি করে যার জিডি নং ১১৮৯,তারিখ ২৬ জুলাই ২০২২ ইং। জিডির সুত্র ধরে নাগেশ্বরী থানার এসআই আশরাফুদ্দৌলা তদন্ত করাকালীন ২৮ জুলাই পয়ড়াডাঙ্গা মোসলিয়ারপাড় বিলে মৃত আলহাজ রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র নুরুল আমিনের জমিতে মাটিচাপা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। পরে ২৯ জুলাই নিহত বাচ্চুর স্ত্রী মোছাঃ লিলি খাতুন একই গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমানের পুত্র মোঃ আবু মুসাসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনের নামে জমিবন্ধকের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে মর্মে দঃবিঃ৩০২/২০১ ধারায় নাগেশ্বরী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন যার নং ১৪।নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসানের বিচক্ষণতায় ২৯ জুলাই (শুক্রবার) রাতে প্রথমে আসামী আবু মুসা(৪০)কে গ্রেপ্তার করে, পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ২.৩০ মিনিটে আল আমিন(৩৫) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে।পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা বাচ্চু হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারোক্তি দিলে আদালতে কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করার পর তাদের জেলহাজতে প্রেরন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই (সোমবার) নাগেশ্বরী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বদিজামালপুর গ্রামের মৃত কয়ছার আলীর পুত্র আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু
তার ছেলেকে নিয়ে সোমবার(২৫ জুলাই) বাড়ির পার্শ্ববর্তী মোসলিয়া নামক বিলে পাট ক্ষেতে পাট কাটতে যান, প্রথমে ছেলের সাথে পাট কাটেন, পরে ছেলে বাসায় চলে গেলেও তিনি একা একা পাট কাটতে থাকেন। পরে সন্ধ্যা অতিক্রম হওয়ার পরেও যখন তিনি বাসায় না ফেরেন তখন বাড়ির লোকজন চিন্তিত হয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। ৩ দিন ধরে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গত বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এক বাচ্চা ও মহিলা তাদের হাঁস খুঁজতে নিকটস্থ মোসলিয়া বিলের পূর্ব দিকে আসলে তারা একটি মৃতদেহের হাঁটু ভেসে থাকতে দেখেন এবং দুর্গন্ধ পাওয়ার পর তারা ভয় পেয়ে অন্যান্য লোকদের বললে মুহূর্তের মধ্যে সেখানে হাজার হাজার লোক তা দেখতে ভিড় জমায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রামে প্রেরন করে।
নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এজাহারন আমিও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করার পর তদন্তে ওপর আসামির সন্ধান মিললে উভয়কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।