ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, সকাল ৬:৩৮
বাংলা বাংলা English English

সড়ক নিরাপদ হবে কবে?


সড়কে মানুষের মৃত্যু কোনো ভাবেই থামছে না। আলোচনা আন্দোলন কোনো কিছুই সরকারকে সচেতন করতে পরছে না, যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিরাপদ হচ্ছে না সড়ক। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমান বন্দর সড়কের শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দু’শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া বাস-চাপায় মারা যায়। দু’বাসের রেষারেষিতে সেদিন আহত হন আরো ১১ জন। ওই ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে এ আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়কের নানা ত্রুটি বড়দের দেখিয়ে দেন। সরকার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেবার প্রতিশ্রুতি দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়। তবে তারা বলেন, আগামীতে যদি সড়ক নিরাপদ না হয়, তবে তারা আবারো আন্দোলন গড়ে তুলবেন।
গত ২৯ জুলাই ছিল বাস-চাপায় নিহত সজীব ও দিয়ার মৃত্যুর চার বছর পূর্তি। সেদিন তাদের বন্ধুরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে পদযাত্রা করেন। খিল-ক্ষেত বাসট্যান্ডের পথচারী সেতুর নিচ থেকে পথযাত্রাটি শুরু হয়। শেষ হয় এমইএস বাসট্যান্ড সংলগ্ন কুর্মিটোলা এলাকায়। এ আন্দোলনে তারা ন’দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে যথাযথ তদন্ত শেষে সড়কে সব হত্যার বিচার করা, গন পরিবহনের মনোনয়ন করা, পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ,সুষ্ঠ কর্ম পরিবেশ, কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট, মাসিক বেতন নির্ধারণ করা। শিক্ষার্থীরা নিজেদের দাবি দাওয়ার কথা বলে স্লোগান দেন। হাতে ছিল নানা কথা লিখা প্ল্যাকার্ড ‘ বিত্রলার্ট ’ রোড ইন বিডি ইজ নট সেফ, গন পরিবহন বৃদ্ধি কর, জেব্রাক্রসিংয়ের সংখ্যা বাড়াও, যানজট মুক্ত সড়ক চাই ,আইন প্রয়োগে সরকার ব্যর্থ কেন? ইত্যাদি লেখা নানা প্ল্যাকার্ড। আর শ্লোগান গুলো ছিল, নিরাপদ সড়ক চাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, সড়কে ছাত্র মরে প্রশাসন কি করে, প্রশাসন কি খায় দায় গুমায় নাকি ? যে হাত ছাত্র মারে সে হাত ভেঙ্গে দাও।
চার বছর আগে করা এসব দাবি এখনো পূরণ হয় নি। সড়ক ও নিরাপদ হয় নি। প্রতিদিনই সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। অথবা বিকলাঙ্গ হয়ে অভিশপ্ত জীবন যাপন করছে কেউ কেউ। প্রতিদিনই সড়কে বাসট্রাক বাড়ছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত চালক ও সহকারী বাড়ছে না। এ ব্যাপারে নানা কথা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত প্রশিক্ষিত চালক ও সহকারী গড়ার কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে পরিবহন মালিকরা নিজেদের অতি মুনাফার লোভে চালক ও সহকারীদের লাগাতার কাজ করান। এসব দেখভাল করার কথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হলেও তারা নির্বিকার। অন্যদিকে তাদের গাড়িতে পৃষ্ঠ হয়ে ছাত্র প্রাণ হারাবার ঘটনাও ঘটছে। বিশৃঙ্খলা আজ এক মৃত্যুঘাতি ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। এভাবে কোনো সভ্য দেশ চলতে পারে না।এজন্য সবার সচেতনতা জরুরি। সড়ক নিরাপদ করার যদি উদ্যোগ থাকে তবে সবাই সচেতন হবেন। যেহেতু সে উদ্যোগ নেই ,তাই সবাই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েছেন। সরকারের আর নীরব দর্শক হয়ে থাকার সময় নেই। যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে সড়ককে নিরাপদ করা এখন সময়ের দাবি।

সব খবর