ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, সকাল ১০:৫৪
বাংলা বাংলা English English

ছাতকে গৃহবধুর রহস্য জনক মৃত্যু এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা


ছাতকে এক গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে নানা ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। রহস্যজনক এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বামীর বাড়ি ও পিত্রালয়ের লোকজনের মধ্যে পাওয়া গেছে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য।

গভীর রাতে থানা পুলিশ গৃহবধু আছলিমা তালুকদারের (১৯) লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। লাশ উদ্ধারের সময় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( ছাতক সার্কেল) রঞ্জয় চন্দ্র মল্লিক ও এস আই মাসুদ রানা সহ ছাতক থানার পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেন এস আই মাসুদ রানা।
গৃহবধু আছলিমা তালুকদার ছাতক পৌর সভার ভাজরা মহল মহল্লার গোলাম কুদ্দুছের পুত্র সাইফুর রহমান সুয়েবের স্ত্রী। আছলিমা তালুকদার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের খিদ্রা কাপন গ্রামের মৃত সুরত মিয়া তালুকদারের কন্যা। তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। সাইফুর রহমান সুয়েব বিমান বাহিনীতে কর্মরত।

পরিবার সুত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় বৃহষ্পতিবার বিকেল ৫ টার দিকে বসত ঘরের সিলিংফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করেন আছলিমা তালুকদার। ওই সময় স্বামীর বাড়ির কোন লোকজন ঘরে ছিলোনা।

একই গ্রামের বাসিন্দা, সাইফুর রহমানের মামা আইনুল হক জানান,বিকেল ৫ টার দিকে সাইফুরের ছোট ভাই তার বাড়িতে গিয়ে জানান,আছলিমা ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়েছে। তিনি দ্রুত তাদের বাড়িতে এসে অন্যান্যদের সহযোগিতায় ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে ছাতক হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের পরিবারের পুরুষ মানুষ কেউ বাড়িতে না থাকায় তিনিই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।

ছাতক হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেট নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। হাসপাতালের এম্বুল্যান্সে করে তিনি তাকে সিলেট নগরীর জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তিনি আছলিমা তালুকদারের মাতা ও এক বোনকে বিকেলেই বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানিয়েছন।

সুয়েবের ছোট ভাই আতিকুর রহমান রিয়াদ জানান, তিনি ভোলাগঞ্জে ছিলেন,খবর পেয়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে এসেছেন। ইতিমধ্যে লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে। তার ভাই চাকুরি করেন বিমান বাহিনীতে। তাদের পরিবারে কোন কলহ নেই।

আছলিমা তালুকদারের চাচা রেজা মিয়া তালুকদার জানান, তার ভাতিজিকে স্বামীর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।আছলিমা মারা যাওয়ার পর ও তাদেরকে খবর দেয়া হয়নি। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তার অন্য এক ভাতিজি ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে খবর জানিয়েছেন। খবর পেয়ে পিত্রালয়ের লোকজন এ বাড়িতে পৌছাতে রাত ১১ টা বেজে গেছে। তাদের পরিবারে অনেক গড়মিল ছিলো।
এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এ বিষয়ে অনেক প্রমানাদি ও তার হাতে রয়েছে জানিয়ে বলেন তিনি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর রশিদ আহমেদ খছরু জানান, বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে তিনি আত্মহত্যার খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় তারা হাসপাতালে ছিলো। সন্ধ্যায় লাশ নিয়ে এসেছেন। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ মর্গে প্রেরণ করেছে। শুক্রবার বাদ জুম্মা মেয়ের পিত্রালয় খিদ্রাকাপন গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় ও অংশ নিয়েছেন তিনি ।

ছাতক থানার এস আই মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনায় থানায় এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এদিকে রাতে বাড়িতে এসেছেন সাইফুর রহমান সুয়েব। বাড়িতে আসার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তিনি ছাতক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছে আতিকুর রহমান রিয়াদ।

সব খবর