ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, সকাল ৭:২৭
বাংলা বাংলা English English

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত


ঢাকা, ৫ আগস্ট, ২০২২ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বিকালে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে এই স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের বন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে স্মরণ সভায় কম্বোডিয়ায় সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের ভিডিওতে ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হয়। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক এম. শফিকুল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান ফজলুর রহমান এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের কর্মময় জীবনের নানাদিক স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, শেখ কামাল বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। শেখ কামাল যদি বেঁচে থাকতেন, আজ আমরা (বাংলাদেশ) যে জায়গায় পৌঁছেছি, তা অনেক আগেই অর্জন সম্ভব হতো।
স্মরণ সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম ক্রীড়া সংগঠক ও বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। মাত্র ২৬ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে এ দেশকে তিনি অনেককিছু দিয়ে গেছেন। ক্ষমতার বলয়ের খুব কাছে থেকেও তিনি ছিলেন নিজ গুণে উজ্জ্বল। মুক্তিবাহিনীর সুদক্ষ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের মধ্য থেকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত ৬১ জনের মধ্যে শেখ কামাল ছিলেন অন্যতম। তিনি মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনীর সংগঠনে ও তাদের প্রশিক্ষণে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনরুদ্ধারে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কাজ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের ভলিবল ও হকিতে শেখ কামালকে সম্পৃক্ত করার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “প্রবল ক্রীড়ানুরাগীও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্ব ছিলেন শেখ কামাল। স্কুল জীবন থেকেই তিনি ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।”
তিনি বলেন, “দেশের যুবকদের যুবশক্তিতে পরিণত করার লক্ষ্যে শেখ কামালের যে অবিস্মরণীয় অবদান- তা ইতিহাসের পাতায় তাকে দিয়েছে এক স্বকীয় মর্যাদা। এ দেশের যুবসমাজের উন্নয়নে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গেছেন।”
স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মোঃ শাহরিয়ার আলম বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যার বয়স ছিল একুশ বছর, তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাঁর পিতাকে গ্রেফতার করে অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরে তিনি (শেখ কামাল) সুকৌশলে তাদের বাড়ি থেকে লুকিয়ে চলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।” শাহরিয়ার আলম বলেন, “যে বাড়িতে তখন শেখ কামালই ছিলেন বয়ঃজ্যেষ্ঠ পুরুষ, তিনি কিন্তু দেশের টানে, দেশের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের জন্য তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের একপ্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।” তিনি শেখ কামালের নির্মোহ ও সাধারণ জীবন যাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন, শিশুকাল থেকে ২৬ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় সবসময়, খুবই সাধারণ একজন শিশু, সাধারণ একজন তরুণ হিসেবেই আমরা তাঁকে দেখেছি।”
স্মরণ সভার শুরুতে প্রধান অতিথি সালমান ফজলুর রহমান ও সভাপতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম, শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে শেখ কামালের কর্মময় জীবনের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং শেখ কামাল এবং ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টে শাহাদাত বরণকারী সকলের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

সব খবর