ঢাকা, শুক্রবার, ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ১১:০৫
বাংলা বাংলা English English

মা কর্তৃক শিশুকে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা, ২৪ ঘন্টায় হত্যার রহস্য উদঘাটন কুড়িগ্রাম পুলিশের!


অতিরিক্ত শাসন করতে গিয়ে মা কর্তৃক শিশু ফরহাদ (১০) কে হত্যা করে লাশ গুম করতে ধানক্ষেতে ফেলে আসার পর স্থানীয়রা দেখতে পেলে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে উক্ত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাতলা বুড়ি গ্রামে।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাতলা বুড়ি গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর পুত্র মোঃ আকবর আলির ধানের ক্ষেতের পশ্চিম পাশে রাস্তা সংলগ্ন স্থানে নিখোঁজ মোঃ ফরহাদ হোসেন (১০) এর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন এবং মৃত ফরহাদ হোসেন এর শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সিভিল সার্জন কুড়িগ্রাম বরাবর প্রেরণ করেন। এ ব্যাপারে উলিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন থেকে শুরু হয় পুলিশের তদন্ত। উলিপুর থানা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব রুহুল আমিন এর চৌকস তদন্তে অর্ধ গলিত মৃত দেহটি উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেরিয়ে আসে হত্যার মূল রহস্য।

সূত্রমতে জানা যায়, শিশুটি গত বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বাড়ি ফিরতে দেরী করায় তার মা ফেরদৌসী বেগম (২৭) তাকে অতিরিক্ত শাসন করতে গিয়ে আঘাত করে বসে, ফলে শিশুটি আঘাত প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ঘাতক মা ফেরদৌসী বেগম বিষয়টি ধামাচাপা দিতে লাশ গুম করার জন্য এবং হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজের মৃত শিশুটিকে একই গ্রামের উক্ত আক্কাস আলীর ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে আসে।

শিশু হত্যায় অভিযুক্ত আসামী নিহত শিশুটির মা মোছাঃ ফেরদোসি বেগম ঘটনার বিষয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে এবং ঘটনায় অবগত ভিকটিমের খালু আ: মজিদ বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্য বিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দী প্রদান করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোঃ রুহুল আমিন বলেন, মামলা এবং আদালতে জবানবন্দির পর আসামিকে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উলিপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিবিড় তদারকিতে তদন্তকারী কর্মকর্তার চৌকস তদন্তে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উদঘাটন হয় মা কর্তৃক শিশু হত্যার নির্মম সত্যটি । তিনি আরো বলেন, সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ন সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নাগরিকদের টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের আলোকে দিবারাত্রি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। শুধু সংঘটিত অপরাধ দমনই নয়, নিয়ন্ত্রন, তদন্ত সহ অপরাধ নিবারনে সার্বক্ষণিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।

সব খবর