ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, ভোর ৫:৩৬
বাংলা বাংলা English English

শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করবে ২৪ দেশের সেনা


আঞ্চলিক তথা বৈশ্বিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিয়ে ৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস) ২০২২- এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং ইউএস আর্মি প্যাসিফিকের যৌথ আয়োজনে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান জেনারেল চার্লস এ. ফ্লিনসহ অংশগ্রহণকারী ২৪টি দেশের সামরিক নেতারা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জেনারেল শফিউদ্দিন এবং জেনারেল ফ্লিন বিদায়ী বক্তব্য রাখেন এবং আইপিএএমএস ২০২২- এ অংশগ্রহণকারী সব দেশের প্রতিনিধিদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন। এছাড়াও পরবর্তী আয়োজক হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধির কাছে আইপিএএমএসের পতাকা হস্তান্তর করা হয়। সবশেষে বাদ্যযন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

বিদায়ী বক্তব্যে জেনারেল ফ্লিন বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঐক্য ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার দৃঢ় বার্তা পাঠাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ২৪টি দেশের স্থল বাহিনীর নেতারা এই সম্মেলনে একত্রিত হয়েছেন। সেই সঙ্গে এই সম্মেলন আয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

অন্যদিকে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বন্ধুর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৬তম আইপিএএমএস-২০২২ উদ্বোধন করেন। ১২ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ’ নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ২৪টি দেশের সিনিয়র সামরিক নেতারা।

এবারের সম্মেলনে ‘বলিষ্ঠ শান্তিরক্ষা’, ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ এবং ‘ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থল বাহিনীর ভূমিকা’ বিষয়ে ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের একটি পর্ব কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়াতে সামরিক কূটনীতি’ বিষয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠকে মিলিত হন অংশগ্রহণকারী সামরিক নেতারা।

এছাড়াও জুনিয়র নেতারা পেশাদারিত্বের ওপর আলাদা আলাদা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলন শেষে প্রতিনিধি দলটি উখিয়ায় বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (এফডিএমএন) কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনের মাধ্যমে ক্যাম্পের বাস্তব চিত্র দেখেন।

সম্মেলনের তৃতীয় দিনে শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ‘বলিষ্ঠ শান্তিরক্ষা’, ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ এবং ‘আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে স্থল বাহিনীর ভূমিকা’ শীর্ষক বিষয়ে ব্রেক আউট সেশনে অংশগ্রহণ করেন।

এসব কর্মকাণ্ড ছাড়াও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে অতিথিদের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বেগবান হবে এবং এই অঞ্চল তথা বিশ্বে বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রকাশ ও সুনাম আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

সব খবর