ষষ্ঠ থেকে নবম-দশম ও একাদশ শ্রেণির বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়ে ভুল তথ্য থাকার পর তা সংশোধন সঠিক না হওয়ায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানসহ দুইজনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী।
তিনি জানান, আগামী ২৯ নভেম্বর আদালতে তাদের সশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে ২০২১ সালে ভুলের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইতে থাকা ভুল সংশোধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ডের চেয়ারম্যান, সদস্য (কারিকুলাম) ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৩ নভেম্বর) সেটির শুনানি হয় এবং তাদের দুজনকে তলব করে আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আলমগীর আলম এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে ১০ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে- ‘১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন ছিল শুধু পূর্ব পাকিস্তানের’; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সকল প্রদেশে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়েছিল।’
৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি’ শিরোনামের লেখায় ৩ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, ‘এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এক সাহসী, ত্যাগী, ও দুরদর্শী নেতার ‘আর্বিভাব’ হয়।’ অথচ প্রকৃত সত্য এই যে, বঙ্গবন্ধু হঠাৎ কোন ‘আর্বিভূত’ নেতা নন। তিনি তিলে তিলে বাঙালি জাতির নেতা হয়ে উঠেছেন।
একইভাবে অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘মাইল’ এর স্থলে ‘কিলোমিটার’ হবে।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ের ২ থেকে ৯ নম্বর পৃষ্ঠার বিভিন্ন জায়গায় ‘শেখ মুজিব’ লেখা হয়েছে। অথচ বর্তমানে সবক্ষেত্রে ‘বঙ্গবন্ধু’ লিখতে হবে মর্মে নির্দেশনা রয়েছে। ২১ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি’ এর স্থলে ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি’ হবে। ২৯ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘প্রেসিডেন্ট ভবন’ এর স্থলে ‘বঙ্গভবন’ হবে।