ঢাকা, শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি, সকাল ১১:৪০
বাংলা বাংলা English English

শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

হুমকির মুখে মানবসভ্যতা,
দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়তে করনীয়


প্রকৃতির সকল দান মিলেমিশে তৈরি হয় পরিবেশ। মানুষ যেখানেই বসবাস করুক না কেন, তাকে ঘিরে একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজ করে। পরিবেশ মানবসভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পরিবেশের প্রতিটা উপাদানের সু-সমন্বিত রূপই হলো সুস্থ পরিবেশ। এই সু-সমন্বিত রূপের ব্যত্যয়ই পরিবেশের দূষণ ঘটায়। যার কারণে পরিবেশের স্বাভাবিক মাত্রার অবক্ষয় দেখা দেয়। যার ফলে পরিবেশ বিভিন্ন কারণে দূষিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট কারণও এর জন্য দায়ী। নানা কারণে পরিবেশ দূষণ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করায় মানবসভ্যতা আজ চরম হুমকির মুখে। তবুও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে কোনো ধারণা সৃষ্টি হয়নি। মানুষ একদিন প্রকৃতিকে জয় করার নেশায় মেতেছিল। প্রকৃতিকে জয় করতে যেয়ে মানুষ নিজেদের ফেলে দিল এক বড় পরাজয়ের মধ্যে। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে আজ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ শঙ্কায় ধুঁকছে। অপেক্ষা করছে এক মহাধ্বংস। মানুষ নিষ্ঠুরভাবে সৃষ্টিকর্তার সাজানো প্রকৃতির বিনাশ করছে। আজ জলে বিষ, বাতাসে আতঙ্ক, মাটিতে মহাত্রাস। দ্রুত গতিতে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সবুজ অরণ্য। যেখানে বাংলাদেশে ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা আছে মাত্র ১৬ ভাগ। প্রতিবছর ৭০ লক্ষ্য হেক্টর জমি মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে পৃথিবীর ৮০ শতাংশ নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত কয়েকটি শহরের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে আমাদের ঢাকা। আমাদের ঘর থেকে বের হলেই মুখোমুখি হতে হয় ভয়ানক ক্ষতিকর পরিবেশের সাথে। এ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য শিল্পকারখানাই বেশি দায়ী। এছাড়াও বিজ্ঞানীরা ৮টি শীর্ষ কার্বন নির্গমনকারী খাত চিহ্নিত করেছেন- যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পলিথিন এবং প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কারণ প্লাস্টিকের ব্যাগগুলি শতকরা ১০০ ভাগই কৃত্রিম পলিথিনের- যা জীবাশ্মের অপরিশোধিত তেল থেকে তৈরি। এগুলো পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ বছর সময় লাগবে- যা মানবজীবনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য হলেও আমাদের এ দূষণ থেকে নিজেদের ও দেশকে রক্ষা করতে হবে। এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভূমিকা পালন করতে হবে। যদি পরিবেশ ভালো থাকে, তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমবে বলে আশা করা যায়। ফলে মানুষ ফুসফুসের বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাবে। সুস্থ পরিবেশ গড়ার জন্য জরুরি পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হওয়া। পরিবেশ বাঁচানোর প্রথম পদক্ষেপ আমাদেরকেই নিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে। ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এছাড়াও বায়োটেকনোলজি প্রযুক্তির সাহায্যে সুপার ফাংশনাল ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করে বর্জ্য বা আবর্জনাকে দ্রুত পচনশীল করার মাধ্যমে সার্বিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করতে হবে। সর্বোপরি শিল্পায়ন বিশ্বকে করেছে অনেক উন্নত ও আধুনিক। তাই শিল্পায়নের অগ্রগতি বজায় রেখেই বিশ্ববাসীকে দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়তে পরিবেশবাদী সংগঠন ও মিডিয়াগুলোর পাশাপাশি জনসাধারণকেও এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে

সব খবর