ঢাকা, শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি, সকাল ১১:৩১
বাংলা বাংলা English English

কোমলমতী শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই হোক নির্ভুল


পাঠ্যপুস্তকে ভুল থাকা এটি একটি ‘লজ্জাজনক’ বিষয়। নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে যখন নতুন পাঠ্যবই, তখনই নানা ভুল নিয়ে উঠেছে নানা তর্ক বিতর্ক। বিভিন্ন মহলেই চলছে সমালোচনা। এমন ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করেছেন। নতুন পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে প্রথম আলোচনা শুরু হয় সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বই থেকে। বিজ্ঞান বইয়ের প্রথম অধ্যায় জীববৈচিত্রে বেশ কিছু অংশ পুরোপুরি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ওয়েবসাইট থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রথম সামনে আনেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাদিম মাহমুদ। গত ১৭ই জানুয়ারি নবম-দশম শ্রেণির ৩টি বইয়ের বেশ কিছু সংশোধনী দেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। তবে প্রশ্ন হচ্ছে -শুধু ভুল স্বীকার করাই কী যথেষ্ট? নাকি এর দায়ও নিতে হবে? পাঠ্যবইয়ের ভুলের সংখ্যা সীমাহীন নয়। তবে যে ধরনের ভুল থাকে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মত নয়। এতে প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ধারণা জন্মায় যে বইয়ের তথ্য সব সময় প্রামাণ্য নয়। কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে বানান ভুল থাকায় ও তথ্যগত অসংগতির কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি হয়। এই দ্বিধা ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করবে। শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে এ বিষয়ে আদালতেও দাঁড়াতে হয়েছে। তবুও ভুল করা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি। তাহলে কি ধরে নিতে হবে পাঠ্যপুস্তকে ভুল থাকা অবধারিত কোনো ব্যাপার ? বই প্রকাশের আগে কয়েকজন বিষয়-বিশেষজ্ঞের কাছেও পা-ুলিপি পাঠানো হয় দেখার জন্য। এমনকি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন উচ্চতর কর্তাব্যক্তির কাছে বই পৌঁছে দেওয়া হয় মূল্যায়ন করতে। এরপরও পাঠ্যবইয়ে এমন ভুল কি করে হয়, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। প্রতিবছর নতুন বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এসব ভুল নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে। এই ভুল থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। আর সেজন্য পুস্তক প্রণয়নে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ যতটুকু সময় দেয় তার থেকে অধিক সময় দিতে হবে। সুতরাং তাদের উচিত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও সংশোধনের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে রাখা। এ ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোও জরুরি। তাহলে এমন লজ্জাজনক বিষয় থেকে বেড়িয়ে আসা সম্ভব। আগামীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরো সচেতন হবে এবং এই সমস্যার উত্তরণ হবে এমটিই আশা করি।

সব খবর