পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে বোরোর আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের চাষিরা। লোডশেডিং ও বরেন্দ্রর ডিপ টিউবওয়েলে সিরিয়াল অনুযায়ী সেচের পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ফসল উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এ অবস্থায় বিকল্প সেচে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে বলে জানান চাষিরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহী অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনেক ডিপ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এ অঞ্চলের নটি উপজেলায় ২ হাজার ৮৭০টি ডিপ টিউবওয়েলের মধ্যে ১৬৭টি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পদ্মার পানি সংরক্ষণ করে কৃষকদের বোরো ধানে সেচ সুবিধা দিচ্ছে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুযায়ী, জেলায় সেচ সুবিধা পান ২ লাখ ১০ হাজার কৃষক। অঞ্চল ভেদে প্রতি ঘণ্টা সেচের পানি নিতে কৃষকদের গুনতে হয় ৮৫ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত।
তবে কৃষকদের অভিযোগ, ডিপ টিউবওয়েলের অপারেটররা সিরিয়াল অনুযায়ী জমিতে পানি না দেয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে বাধ্য হয়ে কৃষকরা মোটর বসিয়ে সেচ কাজ চালাচ্ছেন। এতে প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকদের সেচের পানি নিতে খরচ গুনতে হচ্ছে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
কৃষকরা বলেন, এ বছর ডিপ টিউবওয়েল দিয়ে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বোরোর আশানুরূপ ফলন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে নষ্ট ডিপ টিউবওয়েলগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া ছাড়াও কৃষকরা যাতে নিয়মিত সেচ সুবিধা পান সেজন্য অপারেটরদের মনিটর করা হচ্ছে বলে জানান বরেন্দ্রর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘সেচের কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা – এ বিষয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া কোনো অপারেটর কৃষককে পানি না দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে এবার জেলায় ৬৫ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এখান থেকে ২ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
গত বছরের ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীতে জমিতে সেচের পানি না পেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দুই কৃষক।