ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, বিকাল ৫:৪৪
বাংলা বাংলা English English

রেকর্ডবন্যায় টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়


আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক দিন কাটালো বাংলাদেশ দল। আইরিশদের বিপক্ষে এদিন স্বপ্নের মতো অভিষেক হয়েছে তৌহিদ হৃদয়ের। ব্যাট হাতে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সাত হাজারি ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন সাকিব আল হাসান। একই সাথে বিশ্বের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ারে ৭ হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের মালিক বলে যান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

শনিবার (১৮ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এমন অবিস্মরণীয় এক দিনে নিজেদের ইতিহাসে ৩৩৮ রানের দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ দল। এরপর এবাদত, নাসুম, তাসকিনদের বোলিং তোপে মাত্র ১৫৫ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস। এতে নিজেদের ইতিহাসে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ব্যবধানে জিতেছে টাইগার বাহিনী।

এর আগে টাইগারদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয় ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০২০ সালের ১ মার্চ সিলেটের এই ভেন্যুতেই জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা। তিন বছর পরে একই ভেন্যুতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে রেকর্ড বিস্তৃত করল।

বাংলাদেশের ৩৩৯ রানের টার্গেটের জবাবে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে বেশ দারুণ শুরু পেয়েছিল আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও স্টিফেন ডোহানি। এসময় দলের সংগ্রহ ৫১ করে ফেলেছিল তারা। তবে বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। তার স্পিন ঘুর্ণিতে আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহানি ৩৮ বলে ৩৪ রান করে উইকেটের পিছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

এরপর যেন আগুন হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের দুই পেসার এবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। দলীয় ৬০ রানে প্রথম উইকেট হারানো সফরকারীরা ৭৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে যায়।

পল স্টার্লিং ২২, কুর্টিশ ক্যাম্পার ১৬ ও মার্ক এডিয়ার ১৩ রান করে বিদায় নেওয়ার পর সাত নম্বরে নেমে শেষ ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেওয়া জর্জ ডকরেল ৪৭ বলে ৪৫ রান করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৬ ওভার ৫ বলে ৪০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এবাদত হোসেন। নাসুম আহমেদ ৩টি, তাসকিন ২টি ও সাকিব ১ উইকেট নেন।

এর আগে দিনের শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তবে ইংল্যান্ড সিরিজের মতো আইরিশদের বিপক্ষেও ব্যর্থ হন টাইগার কাপ্তান তামিম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মার্ক এডেয়ারের বলে স্লিপে পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন তামিম। ৯ বলে ৩ রান করে আউট হলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে জুটি গড়ে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। তবে দলীয় ৪৯ রানে লিটনের ২৬ রানে বিদায়ে তাদের ৩৪ রানের জুটি ভেঙে যায়। দশম ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে কাভারে স্টার্লিংকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন।

এরপর ৮১ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আঊট হন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিদায়ের আগে এই ব্যাটারের কাছ থেকে আসে ২৫ রান। এরপর চতুর্থ উইকেটে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসান। তারা দুজনে মিলে ১৩৫ রানের বিশাল জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করেন।

কিন্তু মাত্র ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা সাকিব। তার ৮৯ বলে ৯৩ রানের ইনিংসে ছিল ৯ বাউন্ডারির মার। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে মুশফিকুর রহিম ঝড় তোলেন। ২৬ বলে ৪৪ রান করেন তিনি।

অপর প্রান্তে তৌহিদ হৃদয়ও সজোরে ব্যাট চালাচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল অভিষেকে সেঞ্চুরি করে ইতিহাসই গড়বেন তিনি। কিন্তু হৃদয় নার্ভাস নাইন্টিজের ঘরে গিয়ে ৯২ রান করে আউট হয়ে যান। সব মিলিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ।

সব খবর