ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ৮:৪৭
বাংলা বাংলা English English

পাকিস্তানকে বিশ্বাস করে না আইএমএফ: সাবেক অর্থমন্ত্রী


প্রতীকী ছবি

ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিশ্বাস করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।

স্থানীয় সময় শুক্রবার পাকিস্তানের সাবেক এই অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ আসলে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিশ্বাস করে না। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।

তার মতে, ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ ও পাকিস্তানের ঋণ সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমেই পাকিস্তানের প্রতি আইএমএফের আস্থাহীনতার প্রমাণ মিলেছে।

জিও নিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান মুসলিম লীগের-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এই নেতা আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি, দেশকে ক্রমেই সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়াসহ প্রধান বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব ও বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এড়াতে এবং তার ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে বহুপাক্ষিক ঋণদাতার তহবিলের ওপর নির্ভর করছে।

ব্যাপক ঘাটতি কমাতে, রেকর্ড দাম কমাতে এবং বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য এসব তহবিল গুরুত্বপূর্ণ হবে; যা এখন এক মাসের বেশি আমদানির জন্য যথেষ্ট।

 

আইএমএফ প্রোগ্রামে আটকে থাকার বিষয়ে মিফতাহ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে অর্থমন্ত্রী বলে আসছেন সরকার এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যালোচনা করবে। কিন্তু এখন তিনি ‘এক সপ্তাহের কথাও বলেন না’।

জিও নিউজ আরও জানিয়েছে, সাবেক এই অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন- ‘আমি মনে করি, এই ইস্যুতে পাকিস্তান সরকার যা করতে পারত তার যথাসাধ্য করেছে এবং এখন আমাদের অর্থের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশি দেশগুলো প্রয়োজন যাতে আমাদের বাহ্যিক অ্যাকাউন্টে ঘাটতি না হয় এবং আমাদের বাহ্যিক চাহিদা পূরণ হয়।’ তার মতে আসল ব্যাপারটি হলো ‘আইএমএফ অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিশ্বাস করে না।’

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি এটি পাকিস্তানের ওপর আইএমএফের আরোপিত প্রতিটি শর্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার পরেও একটি কর্মী-স্তরের চুক্তিতে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ বিলম্ব। এই বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি।

মিফতাহ বলেন, ‘আমি স্পষ্টতই বলতে চাচ্ছি, শুধু দক্ষতার অভাব নয়, বিশ্বাসযোগ্যতারও ঘাটতি রয়েছে। এর বাইরেও পাকিস্তান একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের কবলে রয়েছে। এটি আমাদের জন্য কঠিন কয়েক মাস হতে চলেছে… কিন্তু শুধুমাত্র কয়েকটি।’

 

আইএমএফের কাছ থেকে সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে ফেব্রুয়ারিতে কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে কোনো চুক্তিতে পৌছাতে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান। তবে দুই পক্ষই কিছু সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নিতে একমত হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে একটি বেইল আউট চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়, খেলাপি হওয়া এড়াতে পারে পাকিস্তান।

আইএমএফের কাছ থেকে ২০১৯ সালে সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আবেদন করে তখনকার ইমরান খান সরকার। আইএমএফ তখন প্রাথমিক সম্মতিও দেয়। কিন্তু মহামারির মধ্যে ওই ঋণের বিষয়টি আটকে যায়। এর মধ্যে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তন হয়।

মহামারি পরিস্থিতির উন্নতির আবার ঋণ আলোচনা শুরু হলেও পাকিস্তান সরকার প্রাক-শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় চূড়ান্ত চুক্তির বিষয়টি আটকে আছে।

সময়মত চুক্তি হলে ওই সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা ছিল আইএমএফ এর। এখন সেটি আর পাচ্ছে না পাকিস্তান। ঋণদাতাদের মন জয় করতে পাকিস্তান সরকার কর হার এবং জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে। যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সব খবর