ঢাকা, সোমবার, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ৪:৪৪
বাংলা বাংলা English English

মোবাইল গেমে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ


মুঠোফোন আবিষ্কার হয়েছিল মানুষের উত্তম ব্যবহারের জন্য, মোবাইলের উপকারিতা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নাই। কিন্তু মোবাইলের অপব্যবহারে আজ উপকাররে চাইতে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। মানুষের বিনোদনের জন্য বের হয়েছে মোবাইল গেম। আর এই মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে ছাত্রজীবনের চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ জীবনের চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে ধ্বংসের লীলাখেলায় মেতে উঠেছে যুব সমাজ। এর অন্যতম কারণ হলো মোবাইল। অথচ একই প্রযুক্তিকে সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ দ্রুত উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। এখানে পার্থক্য আসলে দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যবহারের। আমাদের দিনের বেশির ভাগ সময়ই কাটে এই মোবাইল গেমের পেছনে ব্যয় করে। তবে এ মোবাইল গেমের কারণে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং বেশি সময় ধরে মোবাইল গেম খেলার কারণে চোখে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত সবকিছুই খারাপ। বেশি সময় পর্যন্ত মোবাইল গেম খেলার কারণে মনোযোগ শুধু মুঠোফোনেই ব্যস্ত থাকে। তাই হঠাৎ মুঠোফোন রেখে অন্য দিকে তাকালে প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হয়। তাছাড়া মোবাইল গেম খেলার সময় ঝুঁকে থাকার কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়ে থাকে। মানুষের চিন্তাশক্তি কমে যায়। সৃজনশীল মেধা হ্রাস পায়। ফলে ব্যক্তির নতুন কিছু সৃষ্টির দক্ষতা কমে যায়। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও কমে যায়। বর্তমান যুগে শিশু, কিশোর, যুবক, যুবতী সবাই মোবাইল গেম নিয়ে এত বেশি আসক্ত যে তারা পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অনেকে পড়ালেখা ছেড়ে দিচ্ছে এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। আজকের যুবকেরাই ভবিষ্যতের প্রদীপ। কিন্তু বর্তমানে যুবসমাজ মোবাইল গেমের প্রতি এতই আসক্ত যে তারা দায়িত্ব, কর্তব্য, কাজকর্ম ইত্যাদি বাদ দিয়ে সারা দিন মুঠোফোনের পেছনে পড়ে থাকে। এর ফলে কাজকর্ম না করায় বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের মানুষ ও চরম দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে। যেহেতু এই গেমের মাধ্যমে শিশু, নারী, পুরুষসহ যুবসমাজ ক্ষতির সম্মুখীন, তাই এখনই আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। এজন্য শিক্ষিত সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। মোবাইল গেমের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে পত্রিকায় সচেতন বার্তা লিখতে হবে। তা ছাড়া পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ইত্যাদির মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় নাটকের মাধ্যমে সবাইকে সতর্ক করতে হবে। মানুষকে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। এভাবে সচেতন করে তুলতে পারলেই মোবাইল গেম থেকে যুবসমাজসহ সবাইকে বাঁচানো সম্ভব। আর অবশ্যই সচেতন হতে হবে সরকার, জনগণ ও অভিভাবকদের। তাহলে এর প্রভাবটি কমতে পারে।

সব খবর