সার্ভার থেকে বিপুল সংখ্যক নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন তথ্য নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেছে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ। রোববার (৯ জুলাই) হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকদের জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন তথ্য গায়েব হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। সার্ভার থেকে তথ্য উধাও হয়নি।
এতে বলা হয়, অনেক নিবন্ধক কার্যালয় তাদের ম্যানুয়াল রেজিস্টারে পূর্বের হাতে লিখা জন্ম নিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্ত না করাতে অনেক নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন তথ্য সার্ভারে নেই। অর্থাৎ ওই নিবন্ধন তথ্যসমূহ কখনও অনলাইনেই আপলোড করা হয়নি।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে এই প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ হওয়ায় হাইকোর্ট আগামী ১০ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল সামিউল ইসলাম রাহাদের স্বাক্ষরে দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইনপুটকৃত তথ্যই এই সার্ভারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত হয়। কিন্তু অনেক নিবন্ধক কার্যালয় তাদের পূর্বের হাতে লিখা জন্ম নিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্ত না করাতে অনেক নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন তথ্য সার্ভারে নেই। এক্ষেত্রে সার্ভার থেকে তথ্য উধাও হয়ে যাওয়া বা সার্ভারের সংরক্ষিত তথ্যের গোপনীয়তা নষ্ট হওয়ার কোনো বিষয় জড়িত নয়। কোনো ডাটা চুরি হয়নি। ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ নষ্টও করেনি বা উধাও করেনি।
এতে আরও বলা হয়, নিবন্ধক কার্যালয়গুলোকে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্টরা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। তৎকালীন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রকল্প কার্যালয়ের (বর্তমান রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়) ম্যানুয়াল জন্ম নিবন্ধন অনলাইনভুক্ত করার বিপুল কর্মযজ্ঞ মনিটরিং করার সামর্থ্যও তখন ছিল না। এছাড়াও, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অতিমাত্রায় ব্যবহারকারীর চাপে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভার ও বিআরআইএস সফটওয়্যারটি অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং তিন মাস বিকল অবস্থায় ছিল।
সফটওয়্যার সচল ও ডাটাবেজটি পুনরুদ্ধার করার জন্য সক্ষম জনবল জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রকল্পের না থাকায় ইউনিসেফ কর্তৃক নিয়োগকৃত কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ও প্রকল্পের কারিগরি টিমের সহায়তায় সিস্টেমটি অটো ব্যাকআপসহ বিআরআইএস সফটওয়ার এবং ডাটাবেজ সচল করা হয়। এহেন অবস্থায় হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন তথ্যাদি অনলাইনভুক্তকরণের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ডাটাবেজে কিছু ডাটার অবলুপ্তি ঘটে।