ঢাকা, সোমবার, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, রাত ৪:২৯
বাংলা বাংলা English English

সরকারি প্রকল্পে চালু করা হোক বৃদ্ধাশ্রম


জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে পরিবারবিহীন এক যাতনার জীবন কাটাতে ও মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে করতে সময় পার করা বাবা-মায়ের আশ্রয়ের নাম বৃদ্ধাশ্রম। ‘বৃদ্ধাশ্রম’ কথাটা শুনলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বয়োবৃদ্ধ মা-বাবার ছবি, যারা শেষ বয়সে এসে নিরন্তন ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই চান না। যারা সন্তানের ছোট পরিবারকে আগলে রেখে জীবনসায়াহ্নে হাসি-খুশি কাটাতে চান। অথচ মানবতার চরম উপহাস! সেই সন্তানই ক্রমে ভুলে যায় বাবা-মায়ের সেই স্মৃতিবিজড়িত দিন। তাকে আগলে রাখার প্রতিটি মুহূর্ত। শত ব্যস্ততার মাঝে একান্ত কাজ করার সময় হলেও নিজের বৃদ্ধ মা-বাবার খোঁজ নেওয়ার সময় হয় না। ছোটবেলায় যে মা-বাবা ছিলেন পৃথিবীর একমাত্র আশ্রয়স্থল, বৃদ্ধ বয়সে সেই মা-বাবাকে সন্তান ঝামেলা মনে করছে, নিজের কাছে রাখার নূন্যতম প্রয়োজনও বোধ করছে না। পাঠিয়ে দেন ‘বৃদ্ধাশ্রমে’। ফলে বৃদ্ধদের আবাসনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে তীব্র গতিতে। নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো দেশের বিভিন্ন দিকে গড়ে উঠছে বৃদ্ধাশ্রম। বর্তমান সমাজ-সংসারে দেখা যায়, বৃদ্ধ পিতা মাতাকে প্রতিপালনের ক্ষেত্রে ছেলে-সন্তানদের ঘর-সংসারে লেগে থাকে ভুল বোঝাবুঝি ও ঝগড়া-বিবাদ। ছেলের বউ তার শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রহণ করতে পারে না নিজের মা-বাবার মতো। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরাও হাঁপিয়ে ওঠে নিজেদের জীবিকার কর্মব্যস্ততায়। মেয়ে-সন্তানেরা বৃদ্ধ পিতা-মাতার দায়-দায়িত্ব বহন করতে পারে না বিভিন্ন কারণে। ইত্যাদি কারণে অধিকাংশ বৃদ্ধ পিতা-মাতা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তখন তাদের জোর করে রেখে আসা হয় বৃদ্ধাশ্রমে। বাংলাদেশে বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে দেখা যায় বৃদ্ধদের ঠিক মতো খাবার দেওয়া হয়না,তাদের প্রয়োজনীয় ঔষধপত্রও ঠিক মতো সরবরাহ করা ও সেবা দেওয়া হয়না। তাই অসহায় প্রবীণদের কল্যাণের বিষয়ে এখনই সরকার ও আমাদের সকলের উদ্যোগী হতে হবে। প্রবীণদের এই অসহায় দুর্দশা এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এর সমাধান না করলে প্রত্যেককেই বৃদ্ধ বয়সে এই অবহেলা ও কষ্টের স্বাদ নিতে হবে। তাই প্রত্যেক জেলায় সরকারি ব্যবস্থায় বৃদ্ধাশ্রম চালুর ব্যবস্থা করতে হবে।গৃহ নির্মাণের মতো বৃদ্ধাশ্রমব্যবস্থা বা প্রকল্পকেও পরিকাঠামো উন্নয়ন হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। সরকারি ব্যবস্থায় বৃদ্ধাশ্রম চালু হলে বহু কর্মসংস্থান হবে, বেকারত্ব কমবে। তাই সরকারি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সব খবর