কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নির্মানাধীন হরিজন পল্লী সংলগ্ন খেলার মাঠের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে গর্ত করে প্রকল্পে মাটি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।নিচু জায়গায় ঘর নির্মান ও ঘরের সামনে গর্ত করায় বিভিন্ন জায়গার হরিজন সম্প্রদায়ের অভিযোগ। মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ থাকলেও অন্য প্রকল্প থেকে গর্ত ভরাটের কথা জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
জানা গেছে,প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দ আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের মৌজা থানা এলাকায় ৩০টি হরিজন পরিবারের জন্য হরিজন পল্লীর কাজ চলমান রয়েছে।ভূমিহীন ও গৃহহীন হরিজন স¤প্রদায়ের ৩০টি ঘরের প্রত্যেকটির নির্মাণ ব্যয় হিসাবে ২লাখ ৮৪হাজার ৫শ’টাকা হারে মোট ৮৫ লাখ ৩৫হাজার টাকা।জমি ক্রয়ের জন্য ১কোটি ২০লক্ষ টাকা ও মাটি ভরাট বাবদ ৩০মে.টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। সব মিলে প্রায় সোয়া ২কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই।আবাসন প্রকল্পটি ১০০শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে।পল্লীতে ১০ফুট প্রশস্থ রাস্তা ও মূল সড়কের সঙ্গে একটি সংযোগ সড়কেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।এছাড়াও শিশুদের খেলার মাঠ,মন্দির ও শশ্মনের ব্যবস্থা রাখা হবে থাকার কথা থাকলেও সেখানে খেলার মাঠ এবং শশ্মানের ব্যবস্থা না করে সেখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ১৫ফুট গভীর গর্ত করে প্রকল্পের ঘরে মাটি ভরাট করা হয়েছে। নিচু জায়গায় ঘর নির্মান ও ঘরের সামনে গর্ত করাসহ নান বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিতে দেখা গেছে হরিজন সম্প্রদায়ের অনেককে।
সরেজমিনে দেখা যায়,প্রকল্পের ঘরের পাশে যেখানে খেলার মাঠ করার কথা সেখানে ড্রেজার বসিয়ে মাটি তুলে ঘরের ভিতরে ভরাট করা হয়েছে।এতে পাশে থাকা ঘরগুুলোসহ পাশ^বর্তি ফসলি জমি ভেঙ্গে পরার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নমানের ইটের খোয়া ও সিমেন্ট কম দিয়ে তরিঘরি করে চলছে ঘরের মেঝে ঢালাইয়ের কাজ।ঢালাইয়ে ব্যবহার হচ্ছে কাদাযুক্ত পানি।হরিজন সম্প্রদায়ের রজনী বাসফোর বলেন,হামার গুলের স্বামী সব সমায় মাল খায়া বেহুশ হয়া থাকে। ঘরের সাথে যেভাবে ডিগি দিচে ছাওয়াতো মরবে মরবে,স্বামীও ডিগিত পরি মইরবে।অজয় কুমার বলেন, দুপুরে মানুষ কাম কাজ করি আসি ভাত খায়া রেস্ট নিবে আর তাতে বাচ্চা কোচ্চাগুলে পানিত পরি মইরবে।সিমু বাসফোর বলেন,আমাদের বিয়ের সময় আমরা মাল খায়া ফুল লোডে থাকি।তখন আমাদের তো হুস থাকে না।ড্রেজার দিয়ে মাটি তুলে পুকুর দিছে।ওই পুকুরোত পরি হামরাও মইরমো,ছাওয়ারাও মইরবে। তারা জানায়,আগেতো পুকুর দেয়ার কথা ছিলো না,বাচ্চাদের খেলার মাঠ করার কথা ছিল, সেখানে গর্ত কেন? নীলা রাণী বাসফোর বলেন,কারেন্টের পোল দিচে,লাইনতো দেয় নাই।ওতি বলে কারেন্টো থাইকপের নয়।আর হামরা ওতি গেইলে খাবার পামো কেমন করি।রিদয় বাসফোর বলেন, আমরা শুনছি আমাদের ওখানে নাকি অনেক টাকা বাজেট আছে।কিন্তু ভালোভাবে ঘরের কাজ করতেছে না। ঘরের সাথে ডিগি দিয়ে আমাদের মরণ ফাঁদ তৈরী করেছে।
ড্রেজার মেশিন বসিয়ে গর্ত করার পাশ্ববর্তী জমির মালিক শচিন্দ্র নাথ বর্মন বলেন,আমার জমির সাথে গর্ত করার বিষয়ে ইউএনও স্যারের কাছে গিয়েছিলাম,কাবিখার বরাদ্দ দিয়ে গর্ত ভরাট করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাহবুবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান,বালু পাওয়া না যাওয়ায় জরুরী ভিত্তিতে ওখান থেকে মাটি তোলা হয়েছে।বরাদ্দ যা পেয়েছি তার থেকে অনেক বেশী খরচ হয়েছে।বাইরে থেকে একটা প্রজেক্ট দিয়ে গর্তটি ভরাট করে দেয়া হবে।